স্নিগ্ধময় ভালোবাসা

 নাম তার স্নিগ্ধ।

 স্নিগ্ধ হলেও সে দেখতে স্নিগ্ধ নয়,, ছিপছিপে একটা শ্যাম বর্নের অবয়ব।

তার বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি প্রায় শেষের পথে তাই জীবনের অনেক পথ দেখেছে মেয়েটি স্নিগ্ধের  বাবা মা 

ভাইয়া ভাবি আছে, 

ভাইয়া ভাবি আলাদা থাকে। 

তার একটা ছোট ভাই আছে তবে সে তাদের সাথে থাকেনা পড়াশোনার জন্য দেশের বাইরে থাকে। 

তাই সংসার টা এখন ওই দেখে।

 মা তেমন কাজ করতে পারে না জীবন টা ক্ষয়ে গেছে তার ছেলে মেয়ে কে বড় করার পিছনে, তাই এখন বিশ্রামের সময়। 

স্নিগ্ধের  বড় ভাইয়া আলাদা হল প্রায় বছর পাঁচ হয়ে গেছে।

 যখন স্নিগ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শুরু করেছে আর এভাবেই জীবনের জটিলতা গুলো কে সে বুঝতে শুরু করেছে। পড়াশোনা এরপর সংসার দেখাশুনা করে নিজের জন্য আর সময় নেই পড়াশোনা প্রায় শেষ দিকে, আর এক টা সেমিষ্টার হলে শেষ হয়ে যাবে। 

এরপর সে জানে না জীবনটা কোথায় গিয়ে থামবে! 

 তো একদিন নিস্তব্ধ ক্লান্ত দুপুরে স্নিগ্ধের ভাবির ফোন এল বলল,, আসছে শুক্রবারে বাবা মা কে দেখতে আসবে সাথে তার সাথে কোন দুস্পর্কের এক খালাতো ভাইয়ের বন্ধু আসবে তা স্নিগ্ধ ভাইয়ের কাজের সাথে সে জড়িত তাই। তো তাই বলতে ফোন দিল ভাবি,, 

 অনেক দিন বাবা মাকে দেখা হয়না আমরা আসব। তো স্নিগ্ধ তা শুনে খুশি হবার চাইতে কিছু টা বিরক্ত হল কারণ অনেকদিন হল কোন খোঁজ নেই,, 

নিশ্চয়ই কোন  দরকারে এবার আসবে!! 

যাই হোক মনে একটা খুশি কাজ করছে অনেক দিন পর কেউ তাদের বাসায় আসবে। যথারীতি শুক্রবার চলে আসল সেই দিন সকালে সবাই। 

 ভাই ভাবির দু'বছরের একটা মেয়ে আছে,, ওকে নিয়ে ভাবি ব্যস্ত 

আর এদিকে ব্যস্ত স্নিগ্ধ রান্নার কাজে,, কতদিন পর যে দেখল এর জন্য অনেক খুশি লাগল স্নিগ্ধের। তার চেয়ে বেশি  তার বাবা মা ছেলে,, ছেলের বঊ নাতনীকে পেয়ে মহাখুশি তারা!! 


সকাল থেকে অনেক ব্যস্ত স্নিগ্ধ বিভিন্ন নাস্তা বানাচ্ছে, দুপুরের খাবারের

 জন্য সব কিছু গুছাচ্ছে 

ভাই ভাবির সাথে যে নতুন আগুন্তকের আগমন হয়েছে স্নিগ্ধ তা 

তেমন লক্ষ করেনি

সে কাজের মাঝেই রয়েছে 

 সবাই খুব গল্প করছে বাবা মা সে নতুন মেহমান কে স্বাগত জানিয়েছে।


 ভাইয়া বলছে নতুন একটা কাজ হাতে নিয়েছে সে এই কাজে ভালো দক্ষ তাই তার সাথে কাটা করবে এরজন্যই এখানে আসল কারণ কাজটা এই জায়গায় ভাইয়ার বাসা এখানে হওয়াতে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। স্নিগ্ধ সবার সামনে নাস্তা নিয়ে এসেছে ছিপছিপে গড়নের মেয়েটির দিকে তাকালে 

পছন্দ হবার কথা না 

সে মাথায় ওরনা পড়ে মুখ ঢেকে এসেছে!

সেই আগুন্তক খুব অবাক হয়ে দেখছে, কি ব্যাপার!! 

সেই আগুন্তক চশমা পড়ে চমৎকার একটা চেহারা। যাই হোক এসবের দিকে স্নিগ্ধের খেয়াল নেই, তার চিন্তা কিভাবে রান্না করে তাড়াতাড়ি দুপুরে দেয়া যায়।তাই সে তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে গেল। যথারীতি সব আয়োজন সুন্দর ভাবে হল ভাবিও কিছুটা সহযোগীতা করল রান্না অনেক সুস্বাদু হয়েছে সবাই খুব প্রশংসা করল,,!

 সেই আগন্তুক অনেক মুগ্ধ হল তাদের আতিথেয়তায়! 

কিন্তু সে অবাক হল 

মেয়েটি চুপচাপ কোন  কথা নেই 

এরজন্য তার কৌতহল হল

 তাকে সে দেখেনি 

আর একবার ও মেয়েটি তার দিকে লক্ষ করেনি। তো যে জন্য এসেছে স্নিগ্ধের

 ভাই তা রাতে জানা গেল,, এই কাজটা শুরু করতে হলে কিছু টাকা প্রয়োজন তার জন্যই বাবার কাছে কিছু জমানো টাকা আছে সেই টাকা দিতে বলল যা ছিল বাবার শেষ সম্বল তা শুনে স্নিগ্ধ অনেক দুঃখ পেল বাবা বছরের পর বছর ছেলে মেয়েদের বড় করার জন্য নিজে সব ত্যাগ করল শেষে কিছু টাকা জমিয়েছে তাও এখন ভাইয়াকে দিয়ে দিতে হবে!! 

এখন স্নিগ্ধের  সংসার চলে ছোট ভাই কিছু টাকা পাঠায় আর স্নিগ্ধ টুকটাক কিছু অনলাইনে কাজ করে তা দিয়ে কোন  মতে চলে যায়।

 বড় ভাই নামেমাত্র মাঝে মাঝে কোন উপলক্ষে বাবা মার জন্য টাকা দেয়!! 

তো আর বাবা কি বলবে ভাইয়া বলছে এই কাজটা যদি সফল হতে পারি তবে তোমাদের সবসময় তখন দেখাশুনা করতে পারব, এখন যা খরচ নিজেদের চলতে হিমশিম খেতে হয় তা শুনে বাবা আর কি করবে বলল,,আচ্ছা নে তোরা ভালো থাকলে আমরা শান্তি পাই। 

যাক এভাবে করে ভাইয়া বাবার শেষ সম্বল টুকু নিয়ে নিল আর স্নিগ্ধ কি বলবে সে এটুকু বলল ভাইয়া তুমি যদি সফল না হও তবে হয়তো বাবা এই চিন্তায় অনেক কষ্ট পাবে ভাইয়া কিছু টা রেগে বলল তুই ছোট হয়ে বেশি বুঝিস না আমি যা করছি ভেবে চিন্তে করব।

 আর কিছু না বলে  স্নিগ্ধ এক অজানা আশংকা নিয়ে সে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল তখন সে আগুন্তক কে এক নজরে দেখল যে কিভাবে যেন সে তার দিকে তাকিয়ে আছে সে দ্রুত তার ঘরে চলে গেল 

সে আগুন্তক বাবাকে বলল চাচা আপনি চিন্তা করবেননা বিষয়টা আমি দেখব কাজটা সফল হলে তখন তো সবাই লাভবান হবে তা শুনে বাবার 

মন কিছু টা হালকা হল। 

সকালে সবাই চলে গেল আবার

 সে একা  ঘর বাবা মা স্নিগ্ধ এভাবে কয়দিন চলে গেছে।অনিশ্চয়তা দিন পার হচ্ছে স্নিগ্ধ কি করবে  বাবা মাকে কে দেখবে এভাবে চিন্তিত মনে  ভাবে, সারাক্ষণ। আনমনে  জানালা দিয়ে দেখছে বাইরের নির্জীব দৃশ্য কয়েকটি সবুজ গাছ পাশে একটা রাস্তা কিছু ছোট ছেলে মেয়ে সে গাছের নিচে খেলা করছে উপরের আকাশটা দেখা যায় তার জানালা থেকে 

আজ আকাশ মেঘলা,

 হাতে একটা বই

বই হাতে নিয়ে যে চোখে কখন ঘুম নেমে এসেছে সে জানেনা। 

প্রচুর বৃষ্টি পড়ছে,, বলা যায় ঝুম বৃষ্টি! সাথে কিছু টা হালকা শীতল বাতাস।

 সে খোলা একটা মাঠে ভিজছে,

কি অন্যরকম আনন্দে যে আনন্দে নেই কোন কৃত্রিমতার ছাপ আড়াল থেকে কে যেন তাকে দেখছে সে বিষয়ে খেয়াল নেই তার। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে স্নিগ্ধ একটা গাছের ছায়ায় দাড়াল, সে গাছ টা শিউলি ফুলের শুভ্রতায় ছাওয়া মুগ্ধ নয়নে তা  দেখে বসে পড়ল,, বৃষ্টি থেমে গেছে তখন, স্নিগ্ধকে দেখার মতো কিছুই নেই তবে বৃষ্টিতে তার ভেজা অবয়বটিতে অন্য রকম মায়া একে দিয়েছে বৃষ্টির জল রঙা ফোটা। হঠাৎ সে চমকে উঠল! কে যেন একডালি শিঊলি ফুল তার মাথার উপর ঢালছে ফুল গুলো সব তার মাথা বেয়ে আখি দুটো স্পর্শ করছে।

 ঘুম ভেঙে দেখে সন্ধ্যা হয়ে গেছে প্রায়,। বাইরে বৃষ্টি হয়েছে খুব। স্বপ্ন টার কথা ভেবে সে স্মিত হেসে ভাবল এসব স্বপ্নেই মানায় বাস্তবে না! সকালে আজ আবার ভাইয়া এসেছে সাথে সে আগুন্তক দরজা খুলে দিয়েছে মুখটা ঢেকে ফেলল যখন দেখল ভাইয়ার সাথে সে আগুন্তক এসেছে ভাইয়া বলল কাজ টা শুরু করে দিয়েছি বাবা কে বলতে আসলাম 

তখন স্নিগ্ধ বলল বাবা তো এখন ঘুমাচ্ছে তোমরা  বস আমি কিছু নাস্তা নিয়ে আসি 

তো ভাইয়া বলল যা বেশিক্ষণ থাকবনা বাবাকে বল আমরা এসেছি 

স্নিগ্ধ বাবাকে ডাকতে বাবা বলল আসছি আমি তুই যা। 

স্নিগ্ধ আপন মনে রান্না ঘরে কিছু একটা বানাচ্ছে মাথায় তখন ঢাকা ছিল।খুব সাধারণ একটা জামা পড়া যখন পিছনে ফেরে তাকায় দেখে সে আগন্তুক তার একদম পিছনে দাড়িয়ে দেখছে তা দেখে স্নিগ্ধ চমকে গেল একি আপনি এখানে!! দ্রুত মুখ ঢেকে নিল স্নিগ্ধ কিন্তু সে আগন্তুক তার চাহনি দেখে ফেলেছে 

সে অপ্রস্তুত ভাবে বলল আপনার ভাইয়া বলল সে চলে যাবে এরজন্যই,,

 তো তার জন্যই তো ভাইয়া আসতে পারত তখন সে বলল দুঃখিত 

আমি এভাবে আসতে চাইনি। 

আপনার ভাইয়া বলল,,তাই!! আসলে সে আগুন্তক কৌতহল বশত আগ্রহ নিয়ে মেয়েটিকে একটু কাছ থেকে দেখতে চেয়েছিল তার জন্য রান্না ঘরে এভাবে আসা যদি ও সে বুঝতে পারছে এভাবে 

আসা একেবারে অনুচিত। 


এই কথা শুনে স্নিগ্ধ আর কি বলবে 

বুঝতে পারলো না

এই ভাইয়ার মাথা খারাপ হয়ে গেছে তার কোন বিবেক বুদ্ধি নেই এভাবে একজন অচেনা মানুষকে রান্না ঘরে পাঠায় মনে মনে মনে বলতে বলতে সে রান্না ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। তার খুব কান্না পেল ভাইয়া এমন কেন!! সে দিন তার ভাইয়া আর 

সে আগুন্তক চলে গেল 

স্নিগ্ধ চুপচাপ সে অবস্থা চেপে গেল। 

সে আগুন্তক চমৎকার দেখতে হলেও মনে তার অনেক ইগো ছিল সে বলল কি এমন চেহারা এত অহংকার মুখ দেখানো যাবেনা আজ তো দেখেই ছেড়েছি

দেখব কিভাবে আমাকে এড়িয়ে চলে 

অথচ সে আগুন্তক কে এড়িয়ে চলার মতো ছিল না তাকে যে দেখত মুগ্ধ হয়ে যেত কিন্তু এই মেয়ে তাকে এড়িয়ে চলছে

আর আজকের অপমান কিছুতেই ভুলতে পারছেনা মেয়েটি এভাবে রাগত ভাবে বেড়িয়ে গেছে তার সামনে থেকে 

একটা ভদ্রতা কি নেই! 

অথচ আগুন্তক বুঝল না সে এভাবে যাওয়াটা মেয়েটি ভয় পেয়েছে বিব্রত হয়েছে!সে আগুন্তক এর মনে একটা জিদ চেপে বসল যা তা নিজের জন্য খারাপ ছিল এই মেয়ের অহংকার কে আমি দেখে নিব এভাবে চলে গেল প্রায় এখন তার ভাইয়ের সাথে সে বাসায় আসা যাওয়া কিন্তু স্নিগ্ধ তার সামনে আর আসত না 

আগুন্তক মনে মনে বলল কি ব্যাপার মেয়েটিকে দেখছিনা! 

এদিকে স্নিগ্ধ এর মা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ল তার বাবা বলল বাবা তোর মাকে ডাক্তার দেখান দরকার তখন সে আগুন্তক বলল চাচা অবশ্যই দেখানো দরকার কাল নিয়ে যান আমি এই হসপিটালের ঠিকানা দিয়ে দিচ্ছি খুব ভালো চিকিৎসা হয় তখন স্নিগ্ধ এর বাবা বলল কে নিয়ে যাবে বলল কেন আপনার ছেলে আপনি যাবেন আর আমি এদিকে কাজ দেখে নিব সবাই এক ভাবে রাজি হয়ে গেল 

স্নিগ্ধ কাল ঘরে একা এটাই সুযোগ এই মেয়েকে শিক্ষা দেয়ার 

তো যথারীতি সকালে স্নিগ্ধের ভাই বাবা মাকে সে ঠিকানায় ডাক্তার 

কাছে নিয়ে গেল। 

একেবারে ঘরে একা স্তব্ধ,,

 নিরব বাতাস বইছে,,, 

স্নিগ্ধ অনলাইনে কিছু কাজ করছে 

হঠাৎ দরজা কড়া নাড়ার শব্দ স্নিগ্ধ ভাবল এই সময় আবার কে আসবে স্নিগ্ধ ডাক্তার কাছে যাইনি মায়ের সাথে কারণ তার অনলাইনে গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ পড়ে গিয়েছিল এই কাজ টা মিস করলে একটা ভালো এমাউন্ট মিস হয়ে যেত তাই সে বাসায় রয়ে গেল তো সে ভাবল এত তাড়াতাড়ি তো বাবারা আসার কথা না!! মাত্র এক ঘন্টা হল।

সে দেখল সে আগন্তুক তার মনে ভয় চেপে ধরল সে তাড়াতাড়ি মুখ ঢেকে বলল ভাইয়া তো বাসায় নেই। 

আপনি এখন চলে যান তখন সে বলল আপনার ভাইয়া আমাকে এখানে পাঠিয়েছে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাগজ রেখে এসেছে এখানে যে ঠিকানার ফোন নাম্বার টা সে কাগজে লেখা তাই একটু আসতে হবে, তখন স্নিগ্ধ অনিচ্ছায় দরজা খুলে দিল সে খুশিমনে ঢুকল স্নিগ্ধ বলল কোথায় কাগজ আমাকে বলুন আমি দিয়ে দেই এরপর আপনি চলে যান 

সে বলল এত তাড়া কিসের!

 আপনার সাথে আমার ঠিক ভাবে

 কথা ও হয়নি! 

আসলে তার ভাই তাকে পাঠাইনি

সে এই সুযোগ খুজছিল কিভাবে মেয়েটাকে শিক্ষা দেয়া যায় সে ভিতরে ঢুকে দরজায় লক করে দিল সে আগুন্তক বলল কোন কথা না আমি যেভাবে বলি সেভাবে করবি তুই,, 

স্নিগ্ধ বলল আমি আপনাকে অনেক ভদ্র ভালো ভেবেছিলাম কিন্তু আপনি যে এমন নীচু মনের আজ জানা হয়ে গেল এই কথা বলতে স্নিগ্ধের চোখ দিয়ে পানি বেয়ে পড়ল। সে আগুন্তক বলল তোর কিসের এত অহংকার আমায় অপমান করিস সব সুন্দরী মেয়েরা আমার পিছনে ঘুরে আর তুই মুখ লুকিয়ে নিজেকে খুব ভালো মনে করিস তখন মেয়েটি চোখের পানি মুছতে মুছতে বলল আপনি কি জানেন না একজন মেয়ে তার চেহারা বাহ্যিক সৌন্দর্য কোন  পর পুরুষ্ কে দেখিয়ে 

(যার সাথে বিয়ে বৈধ 

১৪ জনপুরুষব্যতীত) বেড়াতে পারেনা,, আমি অহংকার বশত মুখ ঢেকে রাখেনি আমি মহান আল্লাহর হুকুম পালনের জন্য তা করেছি এর জন্য কি আপনি আমার সাথে এমন আচরণ করবেন!! 

আগুন্তক বলল হয়েছে আমাকে শিখাতে আসবিনা সেদিন যেভাবে তুই আমার সাথে ব্যবহার করেছিস তা আমার মনে লেগেছে তখন স্নিগ্ধ বলল এভাবে যদি কোন ছেলে আপনার বোনের পিছনে কোন  কারণ ছাড়া আসত তখন আপনি ওই ছেলে কে কি করতেন!! আমি হঠাৎ চমকে গিয়েছিলাম আপনাকে এভাবে দেখতে পেয়ে যদি আপনি কষ্ট পেয়ে থাকেন তবে আমি ক্ষমা পার্থী। 

তখন সে বলল আজ আমি তোকে একা পেয়েছি এই সুযোগ হাতছাড়া করব না

 যা আমার জন্য এক গ্লাস পানি নিয়ে আয়। তখন স্নিগ্ধ খুব ভীতিকর অবস্থায় পানি আনতে গেল এবং মনে মনে বলল আল্লাহ আমাকে তুমি বাঁচাও এমন কঠিন অবস্থা থেকে সে পানি আনল আগন্তুক পানি খেয়ে বলল এখানে বস,

 তখন স্নিগ্ধ বসে পড়ল সে কি করবে বুঝতে পারছিলো না! 

আগুন্তক এবার উঠে দাড়াল একদম মেয়েটির সামনে বলল তোর এই চেহারা নিয়ে অহংকার কাউকে দেখাবিনা আজ আমি দেখ কি করি এই কথা বলতে বলতে সে স্নিগ্ধ এর মাথায় হাত দিল এরপর তার হাত মুখ ছুয়ে গলা পর্যন্ত হাত নিয়ে ওড়না টা জোরে টান দিল সে আগুন্তক হাসতে হাসতে বলল দেখ আমি তোর অহংকার হাতে নিয়ে ফেলেছি এই অবস্থায় স্নিগ্ধ অন্ধকার দেখতে শুরু করল একি হচ্ছে তার সাথে সে কাদছে অবিরত আগুন্তক বলল আজ তোর কান্না মাখা অসহায় চেহারা টা দেখে আমার অনেক শান্তি লাগছে এই কথা বলতে তার ফোন বেজে উঠল দেখল স্নিগ্ধের 

ভাই ফোন দিয়েছে সে বলল ওফফ! এখনি ফোন টা আসতে হবে?

 ফোন টা ধরে স্নিগ্ধ এর ভাই বলল তুই কোথায় নিরব? সে বলল এই তো আমি জ্যামে আটকে গেছি। 

তার ভাই বলল ধন্যবাদ বন্ধু তুই এখানের ঠিকানা দেয়াতে আমাদের অনেক সহজ হল তোর কথা বলতেই ডাক্তার চিনে ফেলল এবং খুব দ্রুত মাকে দেখল এখন আসছি আমরা বাসায় তখন আগুন্তক বলল আরে না ধন্যবাদ কিসের বন্ধুর উপকারে আসতে পারাটাই বড় বিষয় এর আগে আমার মাকে এখানে দেখিয়েছিলাম সে সুবাদে এই ডাক্তারের সাথে পরিচয়! এভাবে বলতে বলতে কথা শেষ করল। স্নিগ্ধ মেলাতে পারল না এই কি সে!! সে আগুন্তক তার হাতে থাকা ওরনা টা তার মাথার উপর দিয়ে দ্রুত দরজা খুলে বেড়িয়ে গেল কিন্তু স্নিগ্ধ স্তব্ধ কি হল তার সাথে সে বুঝে উঠতে পারলো না যেন একটা দুঃস্বপ্ন দেখছে,,

 কিন্তু সত্যিই তার সাথে ঘটেছে।

 এমন অপ্রীতিকর ঘটনা সুন্দর চেহারার আড়ালে মানুষের মন এত খারাপ হতে পারে আজ তার জানা হয়ে গেল।

 তার প্রতি ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই আসল না এদিকে এসব ভাবতে ভাবতে ভাইয়া এসে পড়ল বলল মাকে এক মাসের ওষুধ দিয়েছে খেয়াল করে দেখিস। 

আজ নিরব থাকাতে সহজ হল হস্পিটালে যা ভীড় না হয় দেখাতে দেখাতে বিকেল হয়ে যেত স্নিগ্ধ আর কিছু বলল না সে চেপে গেল সে সুন্দর ভালো মানুষের আড়ালে মানুষ্টি কত খারাপ, কারণ স্নিগ্ধ বললেও ভাইয়া বিশ্বাস করতনা তার সাথে দূরত্ব টা যে অনেক আগেই হয়ে গেছে। 


এভাবে মাস পার হয়ে গেছে মা এখন আগের চেয়ে সুস্থ কিন্তু স্নিগ্ধ ভুলতে পারেনা সে ঘটনা  আর সেদিনের পর সে আগুন্তক তাদের বাসায় আসেনি 

সে যেন নিশ্চুপ হয়ে গেছে 

সামনে পরীক্ষা তাই সেদিকে মন দেবার চেষ্টা এদিকে ভাবি একটা চাকরি পেয়েছে তাদের দু'বছরের মেয়েকে বাসার কাজের মানুষের কাছে রেখে যায় কারণ স্নিগ্ধের  বাসার থেকে ভাইয়ার বাসা বেশ দূরে তাই সেখানে রাখা আর সম্ভব না।

 ভাইয়া যে কাজ হাতে নিয়ে ছিল সেখানে বড় সর লস হয়েছে এখন মুল পুজিটা নিয়ে আসতে পারবে কিনা না

 তাই চিন্তার বিষয়,, 

তবে কি বাবার শেষ সম্বল টুকু শেষ হয়ে যাবে এই কথা ভাবতে স্নিগ্ধ নিরবে অশ্রু ফেলল সে ভাবল কিছু মানুষের স্বপ্ন দেখাই বিলাসিতা। 

তার কিছুদিন পর যে আশংকা করল তাই হল যে কাজটা হাতে নিয়ে ছিল সে সাইট টা বন্ধ হয়ে গেল ভাইয়া প্রায় খুব অল্প কিছু টাকা নিয়ে বের হয়ে গেল যেহেতু লস করেছে আর ভাইয়ার সাথে যে আগুন্তক ছিল তার তেমন ক্ষতি হল না কারণ সে শিক্ষিত বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে শখের বশে এখানে কাজ করতে এসেছিল বাবার অঢেল টাকা তাই এই প্রজেক্ট লস হওয়াতে তেমন ক্ষতি হল না আর এদিকে সে একটা স্কলারশিপ পেয়েছে ভালো সাবজেক্ট এ পড়ার জন্য তাই এখন এদিকে মন বিদেশে যাওয়ার জন্য কাগজ পত্র  ঠিক করছে  এত বড় লস হল বন্ধু কে স্বান্তনা দেবার প্রয়োজন অনুভব করল না। কিন্তু স্নিগ্ধের 

ভাইয়া ভেঙে পড়ল অন্তত বাবার জমানো টাকা গুলো তার নেয়া উচিত হয়নি এই বলে তার মনে অনুশুচনা হল আর 

স্নিগ্ধ এর বাবা খুব কষ্ট পেলেন ভেবেছিলেন এই টাকা গুলো দিয়ে মেয়ের বিয়ে দিবেন কিন্তু সেটা যখন এভাবে নষ্ট হয়ে গেছে তখন তিনি অনেক টা ভিতরে অসুস্থ হয়ে পড়লেন,, কেউ বুঝল না স্নিগ্ধ এর সামনে  যে কালো মেঘে ঢাকা

 দিন অপেক্ষা করছে,, 

একদিন হঠাৎ স্নিগ্ধ এর বাবা মারা গেলেন ব্রেন স্টোক করে নিরবে এতো টা কষ্ট নিয়ে ছিলেন তাই শরীর তা বহন করতে পারল না এর জন্য কাকে দায়ী করবে স্নিগ্ধ তার ভাইকে না তার জীবনে আসা হঠাৎ সে আগুন্তককে না তার ভাগ্যকে!

 

 দায়ী করে আর কি করবে যা হবার তাই তো ঘটারই ছিল স্নিগ্ধ আর তার ভাইয়ার সাথে কথা বলল না সে বলল তুই বাবার শেষ  সম্বল টুকু না নিলেও পারতি!! 

এভাবে করে তাদের আধাঁরের দিন গুলো কাটতে লাগল মা সুস্থ হওয়াতে স্নিগ্ধের  দিন গুলো মাকে নিয়ে কেটে গেল 

ভাইয়া এখন প্রায় এসে দেখে যায় নিজেকে সে খুব অপরাধী মনে করে!! যাই হোক স্নিগ্ধের পড়াশোনা শেষ হয়ে যায়। এবার সে কি করবে এভাবে তো দিন যাবেনা মা আছেন,,

 এত দুঃখের মাঝে একটা সুখবর আসে তাদের জীবনে স্নিগ্ধের ছোট ভাই দেশে খুব নামকরা জায়গায় জব পেয়েছে যা বিদেশে পড়াশোনার সুবাদে সেই ভার্সিটির  টিচার তাকে অফার করে কারণ তাদের প্রতিষ্ঠানটা দেশেই তাই আরও সুবিধা হল ছোট ভাই সে অফার টা সাদরে গ্রহণ করল পরিবার প্রিয় জন থেকে দূরে থাকা অনেক কষ্টের! যাক এবার তবে কষ্টের অবসান হবে। সে খুশিতে একটা ইমেইল লিখে ফেলল বড় আপুকে বলল আপু আমি দুমাস পর আসছি আর একেবারে পড়াশোনা শেষ করতে দুবছর সময় লাগবে সে সময় পর্যন্ত আর একটু অপেক্ষা তোদের কাছাকাছি থাকার 

এই কথাটা জানাতে সবাই অনেক খুশি হল মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা শুকরিয়া জানাল তারা সবাই এটা বুঝল জীবনে যত খারাপ কিছু হোক না কেন তার পিছনে ভালো  দিক একসময় দেখবেই সময় সে বুঝটা সবাইকে দিয়ে দিবে!! স্নিগ্ধ একটা কলেজে শিক্ষকতার দায়িত্ব নিল। কারণ আরো তো দুবছর তাই ভাবল অলস বসে না থেকে কিছু করা যায়, এভাবে ভালোই চলে গেল দিন। কলেজটা বাসা থেকে এক ঘন্টা দূরে 

তাই এত অসুবিধা হল না। 

আস্তে আস্তে সব স্বাভাবিক হতে লাগল কিন্তু স্নিগ্ধ আগের চেয়ে নিশ্চুপ হয়ে গেছে 

কারণ সে দিনের কথা সে এখনো ভুলতে পারেনা তাই নিজের দিকে এখন আর লক্ষ করেনা দু বছর শেষ হয়ে গেছে

 মাঝে ছোট ভাই দু মাসের জন্য 

এসেছিল দুবছর আগে। 

এখন একেবারে পড়াশোনা শেষ করে সে প্রতিষ্ঠান এ কর্মরত রয়েছে। তাই বলা চলে ছোট সুখের সংসার স্নিগ্ধকে এবার বিয়ে দিতে হবে বড় ভাইয়া ছোট ভাই বলছে অনেক তো করলি আমাদের জন্য এবার তোর দিকে দেখ সে বলল নারে আমাকে দিয়ে সংসার হবেনা সংসার করার মন উঠে গেছে সে আসলে এখন আর বিশ্বাস করতে পারেনা তার ভাগ্যে যে আসবে সে ভালো মনের হবে তো!!এরজন্য সে তার স্বপ্ন গুলো কে বিলীন করে দিয়েছে তার উপর সে দেখতে শুনতে এত টা চমৎকার না 

তাই আরও ভয় পায়!! 

স্নিগ্ধ বলে আমাকে নিয়ে

 ভাবিস না দেখি সামনে কি করি। 


নতুন অফিস অন্যরকম পরিবেশ কাজে কর্মে এত ব্যস্ত ছিল যে চারপাশের দিকে তাকানোর সময় হয়নি স্নিগ্ধের ছোট ভাইয়ের সে ভালোই চালাচ্ছিল নতুন অফিসে তার অধিনে নতুন একজন যোগ দিল চাপ দাড়ি চশমা পড়া বাবরি চুলে একজন ছেলে দেখেই খুব চমৎকার মনে হল  তাকে। খুবই সুন্দর ভাবে কাজ করতে দক্ষ ব্যাপার টা মুগ্ধ করল ছোট ভাইয়ের 

সে বলল আপনি দেখছি আমার চেয়ে অনেক ভালো কাজ করেন আমার জায়গায় আপনার থাকা উচিত ছিল,

তখন স্ফীত হেসে বলল আমার এর আগেও এসব বিষয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে কিছু দিন হল এই বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে দেশে এসেছি 

তখন অবাক হয়ে স্নিগ্ধের ভাই বলল বাহ দারুণ তো!! তাহলে তো ভালোই হল আপনার সাথে অভিজ্ঞতা শেয়ার করা যাবে আমি এসেছি কিছু দিন হল তবে কিছু টা বুঝতে সমস্যা হচ্ছে তারা যে বিষয়ে কাজ করছে তা হল ইঞ্জিনিয়ার দালানের ডিজাইন নিয়ে যা এই তিলোত্তমা শহরে প্রতিনিয়ত প্রয়োজন হচ্ছে যার জন্য এই বিষয়ে 

কাজের চাপ বেশি

এভাবে একটা তাদের দুজনের মধ্যে ভালো সখ্যতা হয়ে গেল।। 


একদিন পরিচয় বলতে গিয়ে যখন তার বড় ভাইয়ার নাম বলল তখন সে সব কিছু চিনে ফেলল  তার বড় ভাইয়ার সাথে আর নিরব যোগাযোগ করেনি যখন নতুন প্রজেক্ট টা লস হল এখন সেসবের কথা মনে করে তার একটা দুঃখ বোধ কাজ হল এই সাহস হয়নি  বলতে আরে তোমার  বড় ভাইয়ার সাথে তো কিছু দিন এই বিষয়ে কাজ করেছিলাম 

তাকে আমি চিনি 

এবং তোমার  ফ্যামিলিকে ও

স্নিগ্ধের ছোট ভাইয়ের নিরব কে বেশ পছন্দ হল তার আচার আচরণ খুব শান্ত  ভাবল আপুর সাথে তাকে বেশ মানাবে কিন্তু সে কি রাজি হবে!! 


একদিন সে ছোট ভাই বলল আজ একটু আপুর কলেজে যাব তুমি যদি আজ আমার কাজটা দেখতে তখন বলল কোন  সমস্যা নেই আমি দেখব তো তোমার  আপু কলেজে পড়ে নাকি তখন সে হেসে বলল আরে কলেজে! 

 ওহ আচ্ছা শুনে নিরব বলল!

 তখন নিরবের সে দিনের কথা মনে পড়ে গেল কি করেছিল তার বোনের সাথে 

তা ভেবে মনে অনেক অনুশুচনা হল

 এমন না করলেও পারত সে।

বিদেশে থাকা কালীন অনেক মেয়ের সাথে সময় কাটিয়েছে কিন্তু একসময় তার মনে হল এটা কোন জীবন না আর তার সেদিন এর পর থেকে অন্যরকম একটা পরিবর্তন আসতে শুরু করল মনে আর শান্তি পাচ্ছিল না সে এমন একটা কাজ করতে পারে নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিলনা 

যাই হোক এখন সব অতীত আচ্ছা মেয়েটি সে ক্ষত ভুলতে পেরেছে একবার দেখতে ইচ্ছে হয়  আর তার ছোট ভাই যদি জানতে পারে তখন তার তার প্রতি এত ভালো ধারণা সব নষ্ট হয়ে যাবে 

যদি একবার দেখা করে মেয়েটির থেকে ক্ষমা নেয়া যেত!!  

এভাবে সে নিজের মনে বলতে লাগল। 

তো স্নিগ্ধের ছোটভাই চলে গেল। 


সে ভাবল মেয়েটির কলেজ কোথায় তা জানা গেলে ভালো হত তাহলে একদিন সুযোগ করে তার থেকে ক্ষমা নেয়া যেত

সে ভাবল আজই গেলে কেমন হয় তখন সেও অফিসের একজন কে বলে বেরিয়ে গেল পিছে পিছে গেল 

কিন্তু ছোট ভাই তা জানল না। 

যখন কলেজে পৌছল সে কলেজের গেটের পিছনে দাড়াল অপেক্ষা করছিল কখন বের হয় ছোট ভাই কিছু ক্ষন পর দেখল ছোট ভাই বের হল সাথে তার বোন যদি ও মুখটা খোলা  ছিল দূর থেকে তেমন বুঝা যাচ্ছিলো না সে দেখে ভাবল কতদিন পর মেয়েটিকে দেখল 

কিন্তু বুঝা যাচ্ছিল না চেহারা

 সে ভাবছে কিভাবে মেয়েটির সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইবে।


সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে এল

 স্নিগ্ধ এর ছোট ভাই সজীব 

সজীব বলল আপু এবার তোকে বিয়ে দিব তুই কিছু বলতে পারবিনা 

তখন স্নিগ্ধ বলল বুঝলাম বিয়ে দিবি আমাকে বিয়ে করবে কে আমার কি দেখার মতো কিছু আছে!! সজীব হেসে বলে কে বলে আমার আপু সুন্দর না বিয়ে করবেনা মানে তুই অনেক ভালো মানুষ এতদিন একা আছিস কোন  দিন দেখলাম না কোন  ছেলের সাথে কথা বলতে স্নিগ্ধ হেসে বলে তুই দেখেছিস আমি কথা বলি না বলি সজীব বলে জানি জানি আপু তুই কেমন। তখন স্নিগ্ধ বলল তুই দুপুরে হঠাৎ কলেযে এসেছিলি কেন আমি ভাবলাম আবার কোন  সমস্যা হয়েছে কিনা

তখন সজীব বলল কেন আমি কি আমার আপুর কলেজে যেতে পারিনা দেখলাম তোর কলেজ টা কেমন ওহ আচ্ছা তাই বল হেসে বলল স্নিগ্ধ! 

এভাবে চলছিল তাদের দিন গুলো এখন সবাই চাইছে স্নিগ্ধের  বিয়ে হোক 

সজীব বড় ভাইয়াকে বলল ভাইয়া আপুর জন্য একটা ছেলে দেখেছি আমার সাথে কাজ করে আমার অনেক ভালো লেগেছে তুই যদি তার সাথে কথা বলতি তবে আমি বিয়ের বিষয় নিয়ে বলতাম কারণ তার সাথে আমার অনেক সুন্দর একটা সম্পর্ক হয়ে গেছে বলতে পারিস ছেলেটি অমায়িক! তখন ভাইয়া বলল কাল তোর অফিস ছুটি হলে দেখা করিয়ে দিস আগে দেখি এরপর বলিস তখন ছোট ভাই বলল যাক ফ্যামিলিতে আর কোন  সমস্যা  নেই কিন্তু এখন তাকে কিভাবে বলবে আর তার আপুকে কি তার পছন্দ হবে!!

পর দিন অফিসে সজীব বলল ভাইয়া তুমি বিয়ে করছ কবে তখন সে হেসে বলল মেয়ে তো এখনো দেখা হয়নি মনের মত হলে বিয়ে করব তখন সজীব বলল তো তোমার  কেমন মেয়ে পছন্দ তখন সে বলল কেন মেয়ে কি আছে নাকি যার জন্য বলছ এই বলে হেসে ফেলল 

তখন সজীব একটু সাহস নিয়ে বলল ভাইয়া তোমাকে আমার অনেক পছন্দ হয়েছে যদি তুমি রাজি থাক তবে আমরা বন্ধুর চেয়ে বেশি কাছাকাছি হতে চাই আমার আপুর সাথে বিয়ে দিতে চাই

সে তখন কিছু টা নিরব হয়ে গেল 

তখন এমন চাহনি দেখে সজীব বলল ভাইয়া সরি তোমাকে বিব্রত করার জন্য আমি এভাবে বলতে চাইনি তবে কথাটা মনের ভিতর  রাখতে পারিনি তাই বলে ফেললাম। তোমার  জন্য আরও ভালো মেয়েরা যোগ্যতা রাখে কারণ আপুর সৌন্দর্য বলে কিছুই নেই তবে সে একজন ভালো মানুষ তার জন্য বললাম তোমাকে তুমি রাজি না থাকলেও সমস্যা নেই আপুর জন্য অন্য কাউকে দেখব

 তখন নিরব বলল এত দিন

 সে বিয়ে করেনি কেন

তখন সজীব বলল সে আমাদের গুছাতে গুছাতে নিজের জন্য আর সময় রাখেনি

আর বলে আমাকে কে বিয়ে করবে 

ভালো মনের মানুষ কোথায় পাব! 

তখন নিরব মনে মনে  বলে,, 

আমি তো তোমার  আপুর যোগ্য নই তোমার  আপুর সাথে যা করেছি 

তা যদি তুমি জানতে! 

তখন নিরব বলল তুমি তোমার  আপুকে জিজ্ঞেস কর কি বলে সে!! 

তখন সজীব খুশি মনে বলে তার মানে তুমি রাজি!? যদি তোমার  আপু বলে! তখন সজীব বলে অফিস ছুটি শেষে ভাইয়া তোমার  সাথে দেখা করবে তুমি কথা বল নিরব এবার স্তব্ধ! সে এবার কি করবে? ভাইয়া তো তাকে চিনে ফেলবে 

যাই হোক এভাবে চিন্তা করতে করতে অফিস শেষ হল 

যখন নিরবকে দেখল বড় ভাইয়া বলল তুই এখানে!? তখন নিরব বলল তোর ছোট ভাই সজীব এর সাথে আমরা একসাথে কাজ করি

তখন সে বলল এত বড় আমার যখন বিপদ হল তখন তো তোকে পাওয়া যাইনি তুই জানিস এর কারণে বাবা সহ্য করতে না পেরে অনেক কষ্ট পেয়ে মারা গিয়েছেন 

তোর সাথে আমার বোনের বিয়ে কখনো হবে  না। তখন নিরব বলল বন্ধু আমি আসলে অনেক বড় ভুল করেছিলাম

 তুই আমাকে ক্ষমা কর 

আমি কখনো ভুলতে পারবো না

 তোর এমন আচরণ এই বলে সজীবের বড়  ভাইয়া চলে গেল । 

তখন নিরব কি করবে আর বুঝতে পারছিলো না তার শুধু অনুশুচনা হল কেন এমন করল তাদের সাথে 

বড় ভাইয়া সজীব কে বলল

 আমি এখানে স্নিগ্ধ কে বিয়ে দিবনা 

তখন সজীব বলল কেন ভাইয়া সে এত ভালো আর এমন ছেলে তুই পাবি সব দিক থেকে কত সুন্দর তখন বড় ভাইয়া বলল তুই জানিস না সে আমাদের সাথে কি করেছে তার সাথে আমার আগেই পরিচয় ছিল অতীতে আমরা ও বন্ধু ছিলাম কিন্তু সে বন্ধুত্বের মর্যাদা  দেয়নি

সজীব যখন সব শুনল বলল ভাইয়া এখন  সে অনেক পরিবর্তন হয়েছে কারণ আমি তার সাথে যত মিশেছি বুঝেছি অতীতে একটা ভুল হয়ে ছিল এর জন্য এটা ধরে রাখতে পারিস না তখন ভাইয়া বলল আমি জানি না আমি এই বিষয়ে আর কিছু শুনতে চাইনা। 

তখন সজীব কিছুটা হতাশ হল, 

আপুর সাথে বোধ হয় বিয়েটা হবেনা 

এখনো আপুকে এই বিষয়ে কিছু বলিনি 

তা ভাবতে ভাবতে চলে গেল সে দিন


পর দিন অফিসে লজ্জিত ভাবে সজীব বলল ভাইয়া আমি দুঃখিত তোমার সাথে ভাইয়া এমন আচরণ করবে 

আমার জানা ছিল না 

তখন নিরব বলল না আসলে আমি যা করেছি অনেক অন্যায় করেছি তার জন্য ব্যাপার টা ভুলতে পারেনি তুমি এই বিষয় নিয়ে ভেব না আমি কিছু মনে করেনি

সজীব বলল ভাইয়া আপুকে এখনো এ ব্যাপারে কিছু বলেনি 

তখন নিরব বলল না থাক তোমার  আপুকে এসব কিছু বল না 

বললে সে ও কষ্ট পাবে আর তোমার  আপু আমাকে চিনে আমার কথা বললে হয়তো রেগে যেতে পারে,, তখন সজীব কিছুটা হতাশ মনে বলল আচ্ছা ভাইয়া তোমাকে বিব্রত করার জন্য দুঃখিত! 


তখন নিরব বলল আমরা আগের মতোই থাকব তুমি যে জানার পর ও আমাকে মেনে নিতে পেরেছ তাই আমার জন্য আনন্দের বিষয় তখন সজীব বলল প্রতিটি মানুষ ভুল করে কেউই আমরা 

ভুলের উর্ধ্বে না ভুল টা ক্ষমা করে দিয়ে কাছে নিয়ে আসাটা বড় গুন

আর যে ভুল করে ক্ষমা চায় সেই ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য। 

তখন বলল ভালোবাসার যোগ্য কিনা আমি জানি না তবে এমন ভুল করে সত্যিই সবাইকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। 

জানিনা এই ভুলের ক্ষমা হবে কিনা! 

এই কথা শুনে সজীব নিশ্চুপ হয়ে গেল


এভাবে কিছু দিন চলে গেল

 যে যার মতো চলছে, 


হেমন্তের মিষ্টি রোদ পাখিরা নীল আকাশে উড়ছে তা দেখছে আপন মনে স্নিগ্ধ একটু পর কলেজ যাবে সে মাকে গুছিয়ে দিচ্ছে 

নাস্তা বানিয়ে মাকে খাবার দিয়ে যাবে সে

মা বলল স্নিগ্ধ তুই আর কত পরিশ্রম করবি এবার একটু নিজের দিকে দেখ

স্নিগ্ধ বলল কেন আমাকে তাড়াতে এত ব্যস্ত হয়েছ কেন হেসে বলল স্নিগ্ধ!! 

মা আর কি বলবে চিন্তা করল একটা ভালো ছেলের সাথে বিয়ে দিতে পারলে এবার একটু শান্তি পাবে,! 


কলেজ ছুটি হয়ে গেছে চমৎকার একটা আবহাওয়া, স্নিগ্ধ এর আজ মন টা অনেক ভালো লাগছে 

ভাবল আজকে সে কলেজের পাশে থাকা 

খোলা মাঠের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে থাকা শিউলী ফুলের ছায়ায় বসে কিছু টা 

মুক্ত বাতাসে অনুভব করবে সে শিউলি ফুলের সুবাসিত স্নিগ্ধতাকে, কিছু শুষ্ক শিউলি ফুল ছড়িয়ে আছে 

সবুজ ঘাসে 

তা কুড়িয়ে নিয়ে তার স্নিগ্ধ সুবাস অনুভব করছে ভাবছে তার জীবনে কি আসবে সুবাসিত শিউলি ফুলের শুভ্রতায় ভালোবাসায় ছড়িয়ে দিবে!! 


এই ভাবতে ভাবতে হঠাৎ স্নিগ্ধ  চমকে গেল

দেখল তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে চশমা পড়া বাবড়ি চুলে মুগ্ধতা ছড়ানো সে চেনা মুখটি সে বিশ্বাস করতে পারছিল না আবার সে দুঃস্বপ্ন তার সামনে উপস্থিত হবে।দুঃস্বপ্ন না সুস্বপ্ন স্নিগ্ধের জীবনে 

তা সময় বলে দিবে!!

স্নিগ্ধ দেখে বলল আপনি এখানে!! আবার কি করতে এসেছেন কিন্তু সে এবার দেখায় নিজের চোখ দুটো নামিয়ে নিল কারণ সে চেহারায় একটা শুভ্রতার ছাপ স্পষ্ট!! তখন নিরব বলল হয়তো আপনার সাথে দেখা হবার দরকার ছিল তাই আমার বিবেক এখানে এসে দাড় করিয়েছে, স্নিগ্ধ আমি সে দিনের জন্য অনুতুপ্ত আপনার সাথে যা আমি করেছি

তা অনেক বড় অন্যায় ছিল এখন বুঝতে পারছি সে দিনের কথা মনে পড়লে আমি এখন শান্তি পাই না যদি আমাকে ক্ষমা না করেন তবে তা আমাকে দিকভ্রান্ত করে দিবে স্নিগ্ধ!! ক্ষমা কি করবেন আমাকে? 

তখন স্নিগ্ধ বলল আমি তো ভুলতে বসেছিলাম এখন আপনাকে দেখে আমার আবার মনে পড়ে গেল আপনি যদি আমার সামনে আর না আসতেন তাই আমার মনের শান্তির কারণ হত এখন যদি আপনি আমার সামনে থেকে  চলে যান তবে আমি সবচেয়ে খুশি হব দয়া করে আমার সামনে আপনি আর আসবেন না! 

আর ক্ষমার  কথা বলছেন!! 

ক্ষমা আমি করে দিয়েছি অনেক আগেই 

তখন নিরব বলল আপনি হয়তো মতো মন থেকে আমাকে ক্ষমা করতে পারেন নি 

এর জন্য আমি হয়তো আর শান্তি পাবনা

তখন স্নিগ্ধ বলল কথা আর না বাড়ালে আমি খুশি হব, 

আমি এখন যাব মা বাসায় একা আর আপনি আমার সামনে আসবেন না।

 এই কথা বলে স্নিগ্ধ চলে গেল

 

পিছন থেকে নিরব তাকিয়ে দেখছে তার চলে যাওয়া মনে মনে বলছে আমাকে কি আর এক টা সুযোগ দেয়া যায় না!! 


রাতে নিরব মন খারাপ বসে আছে 

নিরবের মা বলল পড়াশোনা শেষ করলি ক্যারিয়ার শুরু করলি বিয়ের সময় তো শেষ হয়ে যাচ্ছে এবার তো৷ বিয়ে কর তোর পছন্দের কেউ থাকলে বল আর না থাকলে মেয়ে দেখি তখন নিরব বলল মা এখন এসব নিয়ে কথা বলতে ভালো লাগছেনা আমাকে আর কিছু দিন সময় দাও এই বলে নিরব নিজের

 রুমে চলে গেল 

সে ভাবছে কি করবে সে এবার চিন্তা করল স্নিগ্ধের উদ্দেশ্য করে একটা চিঠি লিখবে যেই ভাবা সেই কাজ সে এবার চিঠি লিখতে শুরু করল।


স্নিগ্ধের মা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ল যার কারণে স্নিগ্ধ কয়দিন কলেজে যেতে পারলো না আর এদিকে বড় ভাইয়া ভাবির তাদের কাজের জন্য মাকে একটু দেখার সময় বের করতে পারেনা ফোন দিলে বলে আরে যে কাজের চাপ তোরা তো আছিস সজীব কে বল খেয়াল করতে

আমাদের কাজের চাপ কমলে আসব মাকে দেখতে! একরাশ দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে লাইন টা কেটে দেয় স্নিগ্ধ! সে ভাবে 

ব্যস্ততা কি এতটা নির্মম 

যে প্রিয়জনকে ভুলিয়ে দেয়! 

সজীব বলে আপু তুই ভাবিস না 

আমি তো আছি সজীব বলে আপু তোর জন্য একটা ছেলে দেখেছিলাম কিন্তু ভাইয়া না করে দিল আমার সাথে ও কাজ করে  অফিসে ভাইয়ার সাথে পূর্ব পরিচিত ছিল ব্যবসায় লস হওয়াতে ভাইয়ার সাথে দুরুত্ব সৃষ্টি হয় তখন স্নিগ্ধ বলল আজ সে এসেছিল আমার কাছে। তখন সজীব বলল, তাই তো কি বলল!?

 তখন স্নিগ্ধ বলল ক্ষমা চাইতে এসেছে 

তা যে কারণে হোক 

তখন সজীব বলল অতীতে সে আমাদের সাথে  যে অন্যায় করেছে তার জন্য সে ভুল বুঝতে পেরেছে এখন উচিত আমাদের ক্ষমা করে দেয়া 

তাকে কাছে টেনে নেয়া।

আর যদি তা আমরা না করি তাহলে বুঝতে হবে আমরা আমাদের ইগোর কারণে ক্ষমা করতে চাইছিনা 

আর আপু তুই তো জানিস ক্ষমা করা মহৎ গুন তা শুনে  স্নিগ্ধ বলল হুম। 

তখন স্নিগ্ধ মনে মনে বলল তুই তো জানিস না সে আমার সাথে কি করেছিল! যদি ও আজ তার  অনুতাপের 

অশ্রু জল চাহনিতে ফুটেছিল।

তখন সজীব বলল আপু একটা সুযোগ দে

মানুষটিকে আমার কাছে চমৎকার মনে হয়েছে তখন স্নিগ্ধ আর কিছু বলল না।


আর দিকে মায়ের অবস্থা আরও খারাপ হতে লাগল কিন্তু হস্পিটালে নেয়ার আগে মায়ের এই দুনিয়ার সাথে বিচ্ছেদ হল

ভাইয়ার আর ব্যস্ততা কমল না মাকে 

দেখা হলো না যখন আসল তখন মা আর পৃথিবীতে নেই।

 এখন আর মায়া কান্না করে কি লাভ!! 

৭ বছর আগের কথা ভাইয়া পছন্দ মতো বিয়ে করেছে এই নিয়ে তখন কেউ কিছু বলেনি বিয়ের আগে স্নিংগ্ধের ভাবি বলেছিল আমি সবাইকে আপন করে নিব 

বাবা মাকে নিজের বাবা মায়ের মতো খেয়াল করব বিয়ের পর কিছুদিন ভালোই চলছিল কিন্তু সে ভালো বেশিদিন টেকেনি

ভাবি বলা শুরু করল আমি কি এখানে বান্দী হয়ে এসেছি যে আমাকে সব দেখতে হবে কিন্তু স্নিগ্ধ যখন থাকত সেও ভাবির সাথে সহযোগিতা করত তারপর ও ভাবির মন ভরল না আর এদিকে স্নিগ্ধের  তখন কলেজ শেষ বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠবে,

তখন তারা সিদ্ধান্ত নিল আলাদা হয়ে যাবে  মায়ের এমন অসুস্থতা বাবার অবসর ছোট ভাইটির সবে  কলেজে পড়ে 

এই অবস্থায় ভাই ক্যারিয়ারের কথা বলে 

আলাদা হয়ে গেল স্নিগ্ধ অনেক বার ভাইয়াকে বলেছিল ভাইয়া আর একটা বছর আমাদের সাথে থাক আমিই সব করব কিন্তু ভাইয়া ভাবি আর একসাথে থাকতে রাজি হল না আর এভাবেই স্নিগ্ধের সাথে তার ভাইয়ার একটা দুরুত্ব হয়ে গেল মনে অনেক কষ্ট নিয়ে শুধুই এটাই বলল মা বাবার প্রয়োজনে

 সন্তানরা এখন স্বার্থপর হয়ে গেল!

এভাবে এক বুক কষ্ট নিয়ে তার জীবনে যুদ্ধ শুরু হল মা এবার তাকে ছেড়ে চলে গেল স্নিগ্ধ যে বড় একা হয়ে গেল!! 


এভাবে ছয়মাস চলে গেছে শোকে স্নিগ্ধ পাথর নিজেকে আর গুছাতে পারছেনা

একদিন একটা চিঠি এল স্নিগ্ধ এর কাছে 

চিঠি টা ছিল নিরবের,, 

 লেখা ছিল এরুপ,


জীবনে আমি অনেক মেয়ে দেখেছি

কিন্তু আমি তোমার শান্ত কান্না জড়িত চাহনির মায়ায় পড়ে গেছি

যদি তুমি সুযোগ দাও 

কুড়ানো শিউলি ফুল তুলে 

তোমার কালো কেশে গেথে দিব

শিঊলি  ফুলের সুবাসিত মালা

সে শুভ্রতায় আমি হারাব 

তুমি কি দিবে আমায়

তোমার দু হাত জোড়া 

সে হাত আমি ধরে হাটব 

স্নিগ্ধ শিউলি ফুলের ছড়ানো 

বিস্তৃত খোলা দিগন্তে 

চেয়ে থাকব মুগ্ধতা নিয়ে 

তোমার নয়ন পানে! 


এই চিঠি টা পড়ে স্নিগ্ধ কান্না চলে আসল

সে ভাবল এভাবে কি তার জীবনে কেউ আসবে!?

 সে কি ভেবেছিল ভালোবাসায় হাত বাড়িয়ে দিবে!

 শিউলির ফুলের শুভ্রতায় এসে!! 


২৫বছর পর 

নিরব স্নিগ্ধের ভালোবাসায় আলো করে 

তাদের দুই ছেলে দীপ্ত, অভ্র।

 দীপ্তের  বয়স ২৩ বছর, 

আর আর অভ্রের বয়স ২০ তারা দুজন তার বাবা মাকে অনেক ভালোবাসে অনেক খেয়াল করে।

 আর স্নিগ্ধ নিরবের প্রিয়তমা হয়ে 

তার পরিবার কে আপন করে নিয়েছিল। 

যেভাবে নিজের বাবা মায়ের জন্য করত।


 যখন দীপ্ত এই পৃথিবী আলো করে এল তখন সে কলেজের শিক্ষকতা ছেড়ে দিল পুরো মন দিল তার সংসারে  সে জানত এভাবে করে সন্তানরা তাদের মায়ের ভালোবাসা স্নেহ থেকে বঞ্চিত হবে

তাই সে নিজের ক্যারিয়ার দিকে মন না দিয়ে ভালোবাসা ছায়ায় যেন তাদের সন্তানরা বেড়ে উঠে সে দিকে মন দিল

এখন সে ভালোবাসার ফল স্বচোক্ষে দেখছে তার সন্তানরা তাকে অনেক ভালোবাসে যে ভালোবাসা জন্য

 একসময় সে দুঃখিত ছিল! 

আর নিরব যে দিন স্নিগ্ধকে 

সারা জীবনের জন্য নিজের করে নিল 

শিউলি ফুলের সুবাসিত অভ্রর্থনায়

 স্নিগ্ধের দু আঁখিতে 

সে ভালোবাসা ছুঁয়ে গেল!! 

যে স্বপ্নে স্নিগ্ধ লালায়িত ছিল 

সে ভালোবাসায় ভরে গেল তার জীবন! 


অত এব তাহারা সুখে শান্তিতে 

বসবাস করতে লাগল। 

সমাপ্তি 



 


 


Comments

Popular Posts